সাধকের তন্ময়চিত্ত মননের বীজমন্ত্রে যবে গড়ে একাগ্র সাধনা,
দেবদেবী মৃত্ত হয় গুণ আর ক্রিয়াবলে, পূর্ণ হয় মনের এষণা।
অনু থেকে ভূমা আর ব্যষ্টি হতে সমষ্টিতে পূর্ণ হ’লে সৃষ্টির ধারণা
একটু একটু কোরে তখনই তো গড়ে ওঠে স্কুলেরই মহাউপাসনা।
নানা ঘাত-প্রতিঘাতে, সভ্যতার বিবর্তনে ইতিহাস, জীবনদর্শন
দেবদেবী মূর্ত্তি গড়ে ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে—মানুষের অধ্যাত্ম-মনন।
সৃষ্টির আদিলগ্নে জলমগ্ন পৃথিবীতে এলো মৎস্য, জীর্ণ-অবতার,
গোত্র-ধর্ম ভেদ নয়, একমাত্র লক্ষ তার ধরাধামে বংশেরবিস্তার।
কুর্ম্ম অবতার রূপে দ্বিতীয়েতে কুৰ্ম্ম এলো জলেস্থলে-তারা উভচর,
কখনো জলে আবার কখনো মাটিতে থেকে, সৃষ্টিবক্ষে এলো যুগান্তর।
*
*
শুধু জলে স্থলে নয়, জল আর কাদা নিয়ে আপনারই সর্বঅঙ্গে মেখে
তৃতীয়বতাররূপে বরাহের আবির্ভাব রেখে গেল স্মৃতিচিহ্ন এঁকে।
অর্ধেক সিংহ আর অর্ধেক মানুষরূপে ধরাবক্ষে এলো নারায়ণ,
পঞ্চমেতে বামনের রূপ ধরে মর্ত্তধামে শ্রীবিষ্ণুর হোল আগমন।
মহাবুদ্ধিমান্ সত্ত্বা-ব্রাহ্মণের আবির্ভাব ষষ্ঠারুপে পরশুরাম—
মাটি মাতে ঘতি হেনে কৃষিপর্ব ক’রে গেলো, –তাই তাঁর মাতৃহন্তা নাম।
প্রজাপালনেতে নিষ্ঠ—সপ্তাবতারুপে—ধরাধামে এলেন শ্রীরাম,
অষ্টাবতাররূপে কৃষিভিত্তি সভ্যতার স্বাক্ষ্য রেখে গেলো বলরাম।
*
বিশ্বমাঝে শান্তি সত্য অহিংসা ও মুক্তিমন্ত্র লয়ে নয়-অবতার রূপে
এলেন গৌতম বুদ্ধ – হিংসাময় পৃথ্বিবক্ষে-বিশ্ববাসী তাঁর মন্ত্র জপে।
দশাবতার হয়ে আবির্ভূত কল্কিদেব, আধুনিক শক্তি ও বিজ্ঞান
গতি আর প্রগতিতে সেই থেকে চলমান্, সৃষ্টি— ধ্বংস- পতন- উত্থান।